মেয়েদের হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব ইসলাম

মেয়েদের হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব ইসলাম

মেয়েদের হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব ইসলামে ব্যাপকভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং সেটা ছেলেদের ক্ষেত্রেও। আপনারা জেনে অবাক হবেন যে, ছেলে কিংবা মেয়েদের হস্ত মৈথুনের প্রভাব নিয়ে ইসলামে আলাদাভাবে আলোচনা তো আছেই, পাশাপাশি প্রিয় নবীজি সা. এর একাধিক সহিহ হাদিসও এই ব্যাপারে রয়েছে। যাইহোক, আজকের আর্টিকেলে আমরা হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে ইসলামিক ওয়েতে আলোচনা করবো। পাশাপাশি দেখবো বৈজ্ঞানিক উপায়ে যে, এটি কিভাবে আমাদের দেহের মধ্যে ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার লাভ করে। এছাড়াও দেখবো হস্ত মৈথুন থেকে বাচার উপায় ইসলাম কি বলে সে সম্পর্কে। সর্বশেষ আমাদের পাঠকদের এই বিষয়ে কিছু কমন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাহলে চলুন,  মূল আলোচনায় প্রবেশ করা যাক।

মেয়েদের হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব

মেয়েদের হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব

দেখুন, হস্ত মৈথুন করা ইসলামে সম্পূর্ণ হারাম। আর সেটা ছেলে কিংবা মেয়ে হোক, উভয়ের জন্যই সেটা হারাম। কেন? সেটা ধর্মীয় তথা ইসলামিক ভাবে বোঝার আগে চলুন বর্তমান বিজ্ঞান কি বলে, সেটা জেনে নিই।

২০২৪-২৫ সালের উন্নত বিজ্ঞান দিয়ে আমরা হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব বোঝতে পারবো। বৈজ্ঞানিক ভাবে বর্তমানে প্রমাণিত যে, আমাদের মানব দেহের জন্য হস্ত মৈথুন কোনোভাবেই কল্যাণকর নয়। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে তো নয়ই। এখন হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন যে, হস্ত মৈথুন কিভাবে একজন মেয়ের শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার লাভ করে? আচ্ছা চলুন, সেটা ক্রমান্বয়ে জেনে নিই-

প্রথমত, প্রতিনিয়ত হস্তমৈথুন করার ফলে এটি একটি মেয়ের নেশা হয়ে যেতে পারে। যা পরোক্ষণে শরীরের ক্ষতি সাধন করে।

  • হস্ত মৈথুনের ফলে মেয়েদের যোনির মধ্যে অতিরিক্ত ঘর্ষণের সৃষ্টি হয়। যা জ্বালা-পোড়া ভাব সৃষ্টি করে এবং এতে ঘা হওয়ার সম্ভাবণা বেড়ে যায়।
  • মেয়েদের যোনির ভিতরে ঘা কিংবা ব্যাকটেরিয়া/জীবানুর  মাধ্যমে ইনফেকশন হতে পারে।
  • শরীরে দূর্বলতা অনুভব হওয়া।
  • মাথা ঘোরা এবং খাদ্য মন্দা হওয়া।
  • চোখের ক্ষতি হয় যেমন- চোখে ঘোলা দেখা বা চোখ ব্যাথ্যা হওয়া।
  • অতিরিক্ত হস্ত মৈথুনের ফলে স্মরণ শক্তি হ্রাস পায়।
  • অতিরিক্ত হস্তমৈথুনের ফলে যৌন ক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত মেয়েদের স্নায়ুতন্ত্র দুর্বল হওয়া অথবা ঠিকমতো কাজ না করার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
  • পরিপূর্ণ হজম প্রক্রিয়া এবং প্রসাব প্রক্রিয়ায় সমস্যা সৃষ্টি করে।
  • সঠিকভাবে মানসিক গঠন ব্যাহত হয়।
  • হিস্টোস্টেরণ হরমোনের তারতম্য ঘটে।
  • সামাজিক কাজ-কর্মে পিছিয়ে পরে।

উপরে হস্ত মৈথুনের যে ক্ষতিকর প্রভাবগুলো তুলে ধরেছি, সেগুলো বর্তমান বিজ্ঞানের দেওয়া তথ্য হতেই নেওয়া। এটা ভাবার উপায়ন্তর নেই যে, এটি ব্যক্তি বিশেষ দ্বারা তৈরিকৃত ক্ষতিকর প্রভাব।

তাহলে এখন প্রশ্ন করতে পারেন যে, ইসলামে এর কেমন ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে? আচ্ছা চলুন সংক্ষিপ্তে জেনে নিই মেয়েদের হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব ইসলামে কেমন রয়েছে সে সম্পর্কে।

ইসলামে মেয়েদের হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব

ইসলামে মেয়েদের হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব

ইসলাম এমন একটি ধর্ম, যেখানে সব জিনিসকে মোটামোটি দুই ভাগে ভাগ করেছে। একটি হলো হালাল এবং অন্যটি হারাম। এখন আপনি যদি একটি বিজ্ঞান মনস্ক মানুষ হয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই আপনি ধর্মের সাথে বিজ্ঞানকেই প্রাধান্য দিবেন।

দেখুন, আপনি যখন খুব সূক্ষ্মভাবে ইসলামের হারাম জিনিসগুলোকে লক্ষ্য করবেন, তখন দেখবেন সে হারাম কর্মগুলো কোনো না কোনোভাবে আমাদের দেহের তথা মানবকূলের জন্য খুব ক্ষতিকর। ইসলামে মেয়েদের হস্ত মৈথুনকে সম্পূর্ণভাবে হারাম করা হয়েছে। একইভাবে ছেলেদেরকেও। কিন্তু কেন হারাম করলো মহান আল্লাহ তা’আলা? এর উত্তর ইতিমধ্যে বৈজ্ঞানিক উপায়ে উপরের হস্তমৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাবের পার্টে উল্লেখ করেছি। এখন হয়তো আপনি উত্তর পেয়ে গেছেন যে, ইসলামে কেন মেয়েদের হস্ত মৈথনকে হারাম করা হয়েছে। আমি তো এখানে শুধুমাত্র বৈজ্ঞানিক উপায়ে ব্যাখ্যা করেছি যে, কেন ইসলামে এটা হারাম। এখন চলুন আমরা জেনে নিই ইসলামে এর বিধান কি সে সম্পর্কে।

ইসলামে মেয়েদের হস্ত মৈথুনের বিধান

মেয়েদের হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব ইসলামে হারাম হিসেবে গণ্য করে। যদি সেটার বৈজ্ঞানিক রহস্য ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি। কিন্তু এই সম্পর্কে হাদিস এখনও আমরা জানি নাই। চলুন তাহলে হস্ত মৈথুন ইসলামে হারাম এমন একটি হাদিস সম্পর্কে জেনে নিই-

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি তার দুই চোয়ালের মাঝের বস্তু (জিহ্বা) এবং দুই উরুর মাঝখানের বস্তুর (লজ্জাস্থান) জামানত আমাকে দেবে, আমি তার জান্নাতের জিম্মাদার। (বোখারি: ৬৪৭৪)

এই হাদিস থেকে আপনারা কে কি বোঝলেন? হস্ত মৈথুনকে ইসলামে হারাম বলে ব্যক্ত করেছেন এবং মেয়েদের জন্যও সেটা প্রযোজ্য। বলা হয়ে থাকে, মেয়েদের এবং ছেলেদের অধিকাংশ জাহান্নামে যাবে তাদের জিহ্বার অপব্যবহার এবং লজ্জা স্থানের অপব্যবহার । সুতরাং উপরোক্ত আলোচনা থেকে বোঝাই যায় যে, মেয়েদের হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব ইসলামে ব্যাপকভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং পরকালে তাদের এই অপরাধের শাস্তিও বর্ণনা করা হয়েছে। তাই এই অপকর্ম থেকে দূরে থাকাই কল্যাণকর।

হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাচার উপায়

কিভাবে আমরা হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বেচে থাকতে পারি? এই বিষয়ে অনেকের অনেক মতবাদ রয়েছে। তবে আজকের আর্টিকেলে আমি বিজ্ঞান এবং ইসলামিক পদ্ধতি সমূহগুলোকেই তুলে ধরবো। আলোচনার সুবিধার্থে প্রথমে আমরা বৈজ্ঞানিক উপায়টা জানবো। পরোক্ষণেই আমরা ইসলামিক উপায় সম্পর্কে জানবো। তাহলে চলুন, জেনে নিই।

হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাচার বৈজ্ঞানিক উপায়

হস্ত মৈথুন থেকে বাচঁতে হলে প্রথমে আমাদেরকে জানতে হবে হস্ত মৈথুনের প্রধান কারণ কি? যদি আমরা এর কারণ উম্মেষণ করতে পারি, তাহলে এর প্রতিরোধের মাধ্যমে খুব সহজেই প্রতিকার করতে পারবো। যাইহোক, এই জন্য আধুনিক বিজ্ঞান আমাদেরকে বেশ কিছু বিষয় জ্ঞাত করেছে। চলুন জেনে নিই সেগুলো-

  • যতদূর সম্ভব স্মার্টফোন হতে দূরে থাকতে হবে।
  • একা একা না থাকা।
  • কোনো একটি কাজে লেগে থাকা।
  • একা রুমের মধ্যে স্মার্টফোন ব্যবহার পরিহার করা।
  • পারসোনাল কম্পিউটার বাসার জনসম্মুখে রাখা।
  • প্রতিনিয়ত ব্যায়াম করা।
  • হস্ত মৈথুনের ক্ষতিগুলো নিয়ে চিন্তা করা

মূলত এগুলোই আধুনিক বিজ্ঞান উপায় হিসেবে আমাদেরকে প্রদান করে থাকে। তাহলে বৈজ্ঞানিক উপায় হিসেবে আমরা উপরোক্ত উপায়গুলো মানতে পারি। তবে এগুলোর পাশাপাশি আমরা ইসলামিকভাবেও মেয়েদের হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব এড়িয়ে চলতে পারি। কিভাবে? চলুন জেনে নিই।

হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাচার ইসলামিক উপায়

ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি, বৈজ্ঞানিক উপায়গুলোর থেকেও তুলনামূলক ইসলামিক উপায়গুলোই বেস্ট। বিশ্বাস না হলে আপনি জাস্ট একবার মান্য করে দেখতে পারেন। চলুন তাহলে জেনে নিই ইসলামিক উপায়গুলো-

  • সব সময় আল্লাহর কথা স্মরণ করা। অর্থাৎ আপনার সকল কর্ম মহান আল্লাহ তা’আলা দেখছে, সেটা অনুভব করা।
  • পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া।
  • প্রতিদিন কোরআন তিলাওয়াত করা।
  • যেদিন হস্ত মৈথুনের ইচ্ছা প্রবল জাগবে, সেদিন রোজা থাকা।
  • আখিরাতকে ভয় পাওয়া।
  • কেয়ামত দিবসকে স্মরণ করা।

এগুলোই হলো মূলত ইসলামিক উপায়। তবে দেখতে বা পড়তে যতই সহজ মনে হাক কথাগুলো, সেগুলো কিন্তু ব্যাপক মারাত্মক। দেখুন, এই পৃথিবীতে কোনো কিছু আপনাকে অপরাধ করতে বাধা দিবে না, যদি না আপনি ইসলাম সঠিকভাবে মান্য করেন। কেউ বৈজ্ঞানিকভাবে চুরি বা ধর্ষণকে খারাপ প্রমাণ করতে পারবে না বৈজ্ঞানিক ভাবে, যদি না সে আখেরাত বিশ্বাস করে। কেউ খুনকে বৈজ্ঞানিকভাবে খারাপ প্রমাণ করতে পারবে না, যদি না সে কেয়ামত বা কবরকে বিশ্বাস করবে। যদিও হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব বৈজ্ঞানিকভাবেও প্রমাণিত, তবে আখেরাতকে পরিপূর্ণ বিশ্বাস না করলে আপনিও কখনোই হস্ত মৈথুনকে ছাড়তে পারবেন না। তাই মেয়েদের হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব ইসলামিকভাবে চিন্তা করতে হবে। এবং তা থেকে দূরে থাকতে হবে।

মেয়েদের হস্ত মৈথুনের কত দিন পর করা উচিত?

একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম চাহিদা থাকলেও চিকিৎসাবিজ্ঞান সপ্তাহে একবার বার হস্তমৈথুন করতে পারবে বলে মনে করে। তবে ইসলামে এটি সম্পূর্ণ হারাম।

হস্ত মৈথুনের পর কি নামাজ হবে?

পরিপূর্ণভাবে পবিত্রতা অর্জন করলে অবশ্যই নামাজ হবে। তবে ভালোভাবে গোসল করতে হবে এবং নাপাকি দূর করতে হবে।

মেয়েদের হস্ত মৈথুন নিয়ে শেষ কথা

যদিও মেয়েদের হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব ইসলাম এ প্রচুর আলোচনা হয়েছে, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা সেই প্রভাবগুলোকে প্রাধান্য না দিয়ে নাফসের গোলামি করি। অর্থাৎ, আমাদের মন যখন চায় হস্ত মৈথুন করতে, তখন আমরা আর ডান-বান না ভেবেই মনের আকাঙ্খা পূরণে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। যাইহোক, আপনি ইন্টারনেটে মেয়েদের হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব লিখে সার্চ দিয়েছেন মানি আপনার ভিতর বিন্দু পরিমাণ হলেও সচেতনতাবোধ রয়েছে। আর এই বিধায় এই বিষয়ে জানতে চাচ্ছেন। এছাড়াও আপনি যখন ইসলামে এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জনাতে চেয়েছেন, তার মানে আল্লাহ ভীতিও আপনার ভিতর রয়েছে। তবে যাইহোক, আপনি যদি এরকম নেতিবাচক কর্মে অভ্যস্ত হয়ে থাকেন, তাহলে উপরোক্ত আলোচনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এই পথ থেকে দূরে চলে আসুন। এই জগৎটা হলো ঘন একটা অন্ধকার জগৎ। এখানে আলো খুঁজে আপনি কখনই পাবেন না। তাই অন্ধকার জগৎ হতে আলোর জগৎ এ ফিরে আসুন।

আশা করি আজকের আর্টিকেলটি অর্থাৎ হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জানতে পেরে আপনারা চমৎকারভাবে উপকৃত হতে পেরেছেন। এছাড়াও ইসলামে এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কেও জানতে পেরেছেন।

Leave a Comment