খতমে তাহলীল পড়ার নিয়ম ও অসংখ্য ফজিলত সমূহ

খতমে তাহলীল পড়ার নিয়ম

খতমে তাহলীল পড়ার নিয়ম কি বা খতমে তাহলীল কাকে বলে? খতমে তাহলীল পড়ার ফজিলত সমূহ কি কি নিয়েই আজকের আমাদের এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি। আশা করি খতমে তাহলীল সম্পর্কে উক্ত আর্টিকেলে আপনারা সম্মুখ একটি ধারণা পেয়ে যাবেন বিস্তারিত।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে যে, খতমে তাহলীল কি বা কাকে বলে? মূলত ” لا اله الا الله ” (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্) মৃত ব্যক্তির মাগফিরাত ও জীবিতদের বিপদ-আপদ, রোগ-বালাই হতে মুক্তির পাওয়ার জন্য এই কালেমা ১ লক্ষ্য পঁচিশ হাজার বার পড়াকেই বলা হয় খতমে তাহলীল। আমাদের দেশীয় ভাষায় অনেকে একে খতমে আম্বিয়াও বলে থাকে। যাইহোক, এখন যেহেতু আমরা জেনে গেছি যে, খতমে তাহলীল কাকে বলে, সুতরাং খতমে তাহলীল পড়ার নিয়ম সম্পর্কে সংক্ষেপে জেনে নিই।

নোট: খতমে তাহলীল নিয়ে আলেমদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে, যা নিম্নে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। তাই মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।

খতমে তাহলীল পড়ার সঠিক নিয়ম

খতমে তাহলীল পড়ার সঠিক নিয়ম

খতমে তাহলীল যা মূলত ” لا اله الا الله ” (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্) কে বোঝানো হয়ে থাকে। এখন কিভাবে খতমে তাহলীল পড়বেন? উপরোক্ত যেকোনো উদ্দেশ্যে যদি কেউ খতমে তাহলীল পড়ার মনোনিবেশ করে থাকে, তাহলে তাকে সর্বমোট ১ লাখ ২৫ হাজার বার খতমে তাহলীল পড়তে হবে। কিভাবে পড়বে? এখন তাঁর ইচ্ছানুযায়ী সে একা একা আলাদা ১ লাখ ২৫ হাজার বার পড়তে পারে আবার একই সাথে কয়েকজন মিলে এক সাথেও পড়তে পারে।

নির্দিষ্টভাবে সংখ্যাটা ঠিক রাখতে সে চাল বা কোনো একটি ইলেকট্রিক ডিভাইস ব্যবহার করে কাউন্ট করতে পারে। মূলত ১ লাখ ২৫ হাজার বার খতমে তাহলীল পড়ার পর সম্মেলিত ভাবে সবাই মোনাজাত দিবে এবং মনের ভাসনা ও উদ্দেশ্য মহান আল্লাহর নিকট আর্জি করবে। এটাই হলো মূলত খতমে তাহলীল পড়ার সঠিক নিয়ম।

খতমে তাহলীল পড়ার ফজিলত সমূহ

খতমে তাহলীল পড়ার ফজিলত সমূহ

খতমে তাহলীল কেন পড়া হয়? যদিও উপরে সংক্ষিপ্তে খতমে তাহলীল পড়ার নিয়ত বা কারণ সামান্যভাবে বলা হয়েছে। যাইহোক, এরপরও আমরা অনেকে এখনো জানি না যে খতমে তাহলীল পড়ে কেন কিংব এর ফজিলত কি? চলুন জেনে নেওয়া যাক খতমে তাহলীল পড়ার ফজিলত সম্পর্কে জানা যাক। খতমে তাহলীল পড়ার ফজিলত সমূহ হলো-

  • সাধারণত মৃত ব্যক্তির আত্মার মাগফিরাত কামণা করে তার আত্মীয়রা খতমে তাহলীল পড়ে থাকে।
  • যেকোনো প্রকার কঠিন রোগ-ব্যাধি হতে মুক্তি লাভের আশায় খতমে তাহলীল পড়ে থাকে।
  • কোনো রকম বিপদ-আপদ হতে মুক্তি লাভের আশায়ও খতমে তাহলীল পড়ে থাকে।
  • অন্যায় ভাবে মামলা-মোকদ্দমার হেরেজম্যান্ট থেকে মুক্তি পেতে খতমে তাহলীল পড়া হয়।
  • কঠিন রোগ হতে মুক্তির জন্য খতমে তাহলীল পড়া হয়।

মূলত উপরের ফজিলত সমূহের জন্যই একজন ব্যক্তি খতমে তাহলীল পড়ে থাকে। তবে এর ফজিলত যেমনই হোক না কেন, খতমে তাহলীল নিয়ে রয়েছে নানা রকম বিতর্ক এবং মতানৈক্য। চলুন খতমে তাহলীল নিয়ে থাকা মতানৈক্যগুলো সম্পর্কে জানা যাক।

খতমে তাহলীল নিয়ে বিতর্ক বা মতানৈক্য

মূলত ” لا اله الا الله ” (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্) হলো খতমে তাহলীল এবং এই কালিমাটি হলো ইসলামের মূল জিনিস এবং রসূল সা: দীর্ঘ ২৩ বছরে পুরো জীবনটাতেই উক্ত কালিমার তাৎপর্য মানুষদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন এবং প্রতিনিয়ত তা সম্প্রচারণ করেছেন। এবং কি সাহাবিদেরকে উক্ত কালিমার উপর অটুট থাকার উৎসাহ ও শিক্ষা দিয়েছেন পাশাপাশি আমাদেরকেও তা মান্য করার উপদেশ ও আদেশ দিয়েছেন। তবে রাসূল সা: তাঁর জীবনদশায় কখনো সাহাবী কিংবা কাউকেই এমন কিছু বলেননি যে, আপনারা মৃত ব্যক্তির আত্মার মাগফিরাতের জন্য খতমে তাহলীল পাঠ করুন। আর এতে করে মহান আল্লাহ তা’আলা আপনাদেরকে এই দ্ধারা উপকৃত করবে।

রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনের শিক্ষার ভিত্তিতে সাহাবায়ে কেরাম তাদের জীবনে ঈমানের পিছনে অনেক অনেক মেহনত করে এই কালেমার তাৎপর্য তাদের অন্তরে বসালেও কখনোই তাদের থেকে এমন ধরণের কোনো শিক্ষা বা কথাবার্তা পাওয়া যায় না, এমনকি কল্যাণের সাক্ষ্যপ্রাপ্ত বা খাইরুল ক্বুরুনের কোনো যুগেই এসবের কোনো অস্তিত্ব ইসলামে বিদ্যমান নেই।

সুতরাং আল্লাহ তা’আলার নিকট দোয়া ও প্রার্থণা করি যে, তিনি যেন আমাদের সবাইকে এরকম বিদাত ও ইসলামি বাহির্ভুত কাজগুলো থেকে হেফাজতে রাখে। আর কালিমার সঠিক মর্ম বোঝার তৌফিক যেন আমাদের সবাইকে দান করে, আমিন।

খতমে তাহলীল পড়ার নিয়ম নিয়ে শেষ কথা

খতমে তাহলীল পড়ার নিয়ম নিয়ে শেষ কথা

খতমে তাহলীল পড়ার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত জেনেছি উপরে লেখা হতে। আশা করি একজন পাঠক এখন বোঝতে পেরেছে যে, কিভাবে সে খতমে তাহলীল পড়বে বা আমল করবে। আর পাশাপাশি আমরা আরো জেনেছি যে, খতমে তাহলীলি এর ফজিলত সমূহ সম্পর্কে।

তবে যদিও এর ফজিলত অনেক রয়েছে, তবে উক্ত আমল নিয়ে রয়েছে আলম-ওলামাদের মধ্যে অনেক রকম মত-বিরধ। যা অনেককেই উক্ত আমল করতে কিছুটা পিছুটান ঘটায়। যাইহোক, উক্ত আমল করার পূর্বে সিউটির জন্য সবারই উচিত অন্তত একবার হলেও একজন অভিজ্ঞ আলেম ও পরহেজগারের নিকট গিয়ে বিস্তারিত এর সত্যতা যাচাই করা। কেননা মহান আল্লাহ তা’আলা আমাদের সবাইকে বিচার-বিবেচনা করার বুদ্ধিমত্তা দিয়েছে। সর্বপরি বলা চলে যে, খতমে তাহলীল পড়ার নিয়ম ও ফজিলত সম্পর্কে জানতে পেরে আপনারা ব্যাপকভাবে উপকৃত হতে পেরেছেন।

Leave a Comment